সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
বরিশাল মহাশ্মশানে মরদেহ সৎকারে বাঁধার অভিযোগ পাওয়া গেছে শ্মশান কমিটির বিরুদ্ধে।
শনিবার বিকাল সারে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে শ্মশান থেকে মরদেহটি তাদের স্বজনসহ বাইরে বের করে দেওয়া হয়।
মহাশ্মশান কমিটির অভিযোগ মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন।
অভিযোগ করে বরিশাল নরসুন্দর কল্যান ইউনিয়নের সভাপতি নির্মল চন্দ্র বলেন, নগরীর চাঁদমারি খেয়াঘাট এলাকায় নিখিল হেয়ার ড্রেসারের মালিক নিতাই চন্দ্র শীল (৫৪) বুকে ব্যাথা ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে শনিবার সকালে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। পরে দুপুর সারে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হলে ধর্মীয় রিতি নীতি শেষে দাহ কাজ অর্থাৎ সৎকার সম্পন্ন করতে বরিশাল মহাশ্মশানে নেয়া হয় সারে ৩টার দিকে।
তবে নানা অযুহাতে শ্মশান থেকে মৃতদেহসহ তাদের স্বজনদের সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে শ্মশান কমিটি মেডিকেল সার্টিফিকেট চাইলে তা এনে দেখানো হয়। পরে তারা জানায় সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা না হলে সৎকার কাজ এখানে হবে না। একবার তারা ভোটার আইডি দেখতে চায় আবার কিছুক্ষণ পর কাউন্সিলরের সনদ পত্র দেখতে চায়। সেগুলোও আনা হয়।
কিন্তু বিকেল সারে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সারে ৭টা পর্যন্ত বৃষ্টির মধ্যে মৃতদেহ সহ স্বজনদের শ্মশানের বাইরে অমানবিক ভাবে দাড় করিয়ে রাখে শ্মশান কমিটি। এখন এখানে দেহ দাহ সম্পন্ন হবে কিনা সে বিষয়েও নিশ্চিত নই আমরা।
এই বিষয়ে বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মূখার্জী কুডু বলেন, বিকাল ৪টার দিকে মৃতদেহটি শ্মশানে আসে। যিনি মারা গেছেন তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাই নিয়ম কানুন মেনে আমরা মৃতদেহ সৎকার করবো। এছাড়া শ্মশানে একটি মৃতদেহ সৎকারের কাজ চলছে তাই তাদের বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদের কাজ শেষ হলে তারা ডিসি, সিটি কর্পোরেশন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সৎকার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।
মহাশ্মশানে দাহ করার স্থান তিনটি রয়েছে তবুও কেন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে মানিক মুখার্জী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তাই আমরাও আতংকিত।
বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিৎ দত্ত লিটু জানান, আমরা বিষয়টি শুনে সাথে সাথে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাথে যোগাযোগ করি। তারা মূলত আতংকিত ছিলো। বিষয়টি সমাধান করা হচ্ছে।
এদিকে জানা গেছে, করোনা ওয়ার্ডে নিতাই চন্দ্র শীল মারা গেলেও তার রিপোর্ট না পেয়েই সে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানান দিচ্ছে শ্মশান কমিটি। যাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হিন্দু ধর্মীয় নেতারাও।
অপরদিকে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও নানান অভিযোগ ছিলো। এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকারের বিরুদ্ধে রাজমিস্ত্রিদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ ছিলো। তাছাড়া মৃত ব্যক্তিদের মঠ তৈরীতে স্বজনদের কাছ থেকে নিয়মের দোহাই দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। তবে স্থানীয় এক নেতার নাম ভেঙে এসব অপকর্ম করায় তার বিরুদ্ধে সহসা কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়না।